‘শিক্ষকদের দাবি সকলের দাবি’
সারারাত লিফলেট ও পোস্টার লিখি
সারাদিন বিলি করি হাতে হাতে সেঁটে দিই
তোমার মনের মতো শহরের সজল দেয়ালে

কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আমি
কলেজে কলেজে ছাত্রসভা করি
‘ধর্মঘট’ ছড়াপত্র প্রকাশিত হয় সারাদেশে
সম্পাদক বলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ সাহেব
মানহানির মামলা করতে চান আমার বিরুদ্ধে

জানো তোমারই মতো এমন আমার দেশ
আলোকবর্তিকা গুরুজন ভুলুণ্ঠিত পথে
কর্ণহীন চক্ষুহীন সরকার; অনশন নয় হুতাশন
শিক্ষকদের এমন আছে কি নজির কোনো?

আমি তাই ভুলে স্নানাহার ঘুমক্লান্তি
ফেলে রেখে কবিতার পাণ্ডুলিপি
আন্দোলন সংগঠিত করি প্রতিবাদে
ধর্মঘট সমর্থনে। কাল অনশনে যাব

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সনির্বন্ধ সম্ভাষণে বলব;
হে বন্ধুগণ আসুন বিদ্রোহ করি
আসুন আমৃত্যু অঙ্গীকার করি
“আপোস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম” স্লোগান তুলি

ফকির আবদুর রাজ্জাক রাশেদা আপা
মাহবুব ভাই আহমেদ হোসেন এমনি
আরো কত সাহসী শিক্ষকনেতা সংগ্রামের
ইডেনের সালমা শাহানা বদরুন্নেছার চঞ্চল রেহানা উমা
হোম ইকনমিক্সের ঝিলি আর্টস কলেজ থেকে পিন্নি
ওরাও আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে
বাদশা (আমার প্রিয় সাথিটি)-র মতো
সরকারি শিক্ষক সমিতি
তোমার কলেজে আসি প্রতিদিন
প্রিন্সিপালের কক্ষে স্টাফরুমে ক্লাসরুমে
ভিজিটর বারান্দায় বসে সভা করি

শিকদার মোখলেছ মনু মিয়া কাশেম আম্বিয়া আনোয়ারা
চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা সবাই আপন জানে
গাছগুলি নিত্য সহচর
বিরাট লোহার গেট আজ খোলা
সকাল বিকাল রাত্রি
নেই কোনো নিষেধ আমার
যে কারো সাথেই কথা বলি
আনমনে আবৃত্তি শোনাই
অনায়াসে কান পাতি জনারণ্যে মানুষের কলকাকলিতে

চতুর্দিকে রব আসে মিছিলের স্বর আসে উন্মাতাল
নিভৃত নির্জন থেকে একজন একাকী হারায় মনে হয়
শুধু তুমি নেই

ধর্মঘট হয়েছে সফল অবশেষে? ক্লান্ত শ্রান্ত হাওয়াকে শুধাই।
আকাশে উড়ন্ত বল্লমের মতো তোমার বিদ্রোহী উত্তরীয় ভাসে
শহর শোকার্ত বার্তা শোনে : তুমি নেই তোমার অপেক্ষা শুধু
পড়ে আছে পাশে।