নাম রেখেছি সাহস তোমার
কানাছেলে পদ্মলোচন অমন নয়;
সত্যিকারের সাহসী হবে।
মনে রেখো দুঃসময়ে জন্ম তোমার
দেশে যখন স্বৈরশাসন, গণতন্ত্র-আচার-বিচার
জেনারেলদের বুটের নিচে।

জন্ম তোমার যে মাহেন্দ্রক্ষণ; শেষ বিকেলের
লাল আভায়, তখনও তোমার জন্মদাতা,
বুলেট-ঝাঁঝরা শহীদ সাথির শোকসভায়।
জননী জরায়ু ছিঁড়ে যখন তুমি রক্তপাতে
এই দুনিয়ার আলো-হাওয়ায় সদ্য এলে,
শহীদানের রক্ত-স্রোত তখনও ভাসে সবুজ ঘাসে
তোমার জন্মের স্রোত এসে মিশে গেছে সেই স্রোতে
নতুন যিশু এলে তুমি ক্রুদ্ধ ক্রোধে ভাঙতে কালের ক্রুশ।

নাম রেখেছি সাহস তোমার,
শখ করে নয়, ইতিহাসের গভীর বোধে,
সোনার চামচ মুখে যাদের জন্মতিথি
মনে রেখো তুমি তাদের সহোদর নও,
তুমি হ’লে ঔরশজাত জন্ম চাষার;
লাঙল ঠেলে, তাদের খোকা; রাত্রি খুঁড়ে তুলছে যারা
সোনায় রাঙা আলোর খনি; অন্ধসেলে বন্দি তবু
তাদের গোটা জীবন-মরণ।

অন্ন জোগায়, বস্ত্র বুনায়, ঐশ্বর্য দেয়,
স্থাপত্য আর শিল্পকলা, কৃৎকৌশল
সকল কিছুর মূলনির্মাতা;
অশিক্ষায়, অনাহারে ধুঁক্ছে তবু, তুমি হলে
তাদের সিপাই।
শিরস্ত্রাণ কোথায় তোমার, বর্মবাঁধা?
মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে লড়বে একা?
ইথিওপিয়ার শিশুর মতন অকালমৃত্যু
রুখতে তোমার পিতৃপুরুষ লাগাতার
লড়ছে লড়াই।

নাম রেখেছি সাহস তোমার
না যেন হও নগণ্য আর কাপুরুষ।