১৯৭৯ এর মার্চ ১৭ থেকে ২০ অব্দি অধিকার আদায়ের দুরন্ত স্পর্ধায়
অনশন ধর্মঘটী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর বন্ধুদের সমর্থনে

পিয়ন হলুদ ব্যাগ খুলে রোজ দিয়ে যায় চিঠি
বর্ণময় চিঠি সব : ডুবুরির মতো খুঁজি শুধু শুধু
মতিহার থেকে আজ আর কোনো চিঠিই আসে না

বাতাসে খবর আসে, কাগজে খবর আসে
মতিহারআহা! শ্যামলিম মতিহার আজ
বারুদের গন্ধে ভরপুর নির্বাসিত দ্বীপ এক
ডাকবাক্স বহুদিন এক এক পরিজনহীন
উদ্বাস্তু বৃদ্ধের মতো ঠায় রোদে ঝিমোয় দুপুরে
চঞ্চল যৌবন তার খরদৃষ্টি মেলে আর হাতে
তুলে নেয় না গোলাপ, সবুজ চত্বর জুড়ে সব ঘাতক শিকারি
পাখিরাও ছেড়েছে আবাস, ভয়ে নীল কাঠ হয়ে
আছে সেই শ্যামল সবুজ মনোমুগ্ধ মতিহার
চারিদিকে প্রহরীর বুটশব্দ, উদ্যত শত্র“র রাইফেল

আমি নিজে মতিহার দেখিনি এখনও
সবুজ চিঠিতে তার শুনেছি বর্ণনা শুধু
অঙ্গেমাখা শোভা শাড়ি পুষ্প আঙরাখা
বহুদিন স্বপ্নের তিমিরে তাকে বহুরাতে
শুভঘ্রাণে জড়িয়েছি তুমুল বাহুর বানে তিথিডোরে

শুনেছি নরম সেই মন কখনোবা রুদ্ররতি
চৈত্রের মাটির মতো আক্রোশে চৌচির হয়
শিলার আঘাত হানে কালবৈরী বাতাসের স্বরে

ধানমাটি খরা হলে তবু রোপা দেবে কেন মন
অনশন! অনশন! মৃত্যু ছুঁয়ে যায় ঠোঁট যাক
পরাজয় মানব না তবু জলের ওপরে জ্বলে
জীবনের লাল শিখা, বয়ে যাক শিখামুখি নীল সমীরণ

আরো ভালোবাসা জমে ওঠে বুকে মুগ্ধ প্রেমে
আহা আমি তোমাদের অনুগত বন্ধু হব
ইশারায় বুক থেকে খুলে দেব হাড় মাংস
পাঁজরের অস্থিপুঞ্জ শির কশেরুকা তরুণ যৌবন
প্রেমের সকল চিহ্ন আমি তুলে দেব মতিহার
তুমি যদি একবার ডাকোএকবার ডাক দাও :
কই অঙ্গীকার?

মতিহার পুড়ে গেলে আমিও বিদগ্ধ হব
মতিহার জ্বলে গেলে আমিও বিবর্ণ হব
মতিহার জ্বলে ওঠে আমিও উঠেছি জ্বলে
সাহসী মানুষ আমি মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নেব দেখো

নীহারের ব্যাগ থেকে প্রতিদিন মুঠো মুঠো চিঠি
তোলে বন্ধুরা আমার, ঠায় মুঠো বুকে আসে
সশব্দ আঘাতে, পাখিরা সংগীত করে ডাকে মতিহার
সবুজ চাদরে মোড়া সেই নীল চিঠিখানি কোনোদিন
কোনোদিন আসবে না আর?