জোছনার ভেতরে বাড়ি ফিরছি ক’দিন
এরকম বহুদিন আমি বাড়ি ফিরিনি।

বাড়ি বলতে সেই যমুনার স্মৃতি :
বুকের ভেতরে বেদনার নদী,
আমার মা; জেগে থাকে সারারাত
জরাজীর্ণ, শীর্ণকায় ছায়া ফেলতে ফেলতে
ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে হিম মৃত্যুর গুহায়;
খুক্কুক্ কাশি আর ঘুমের মধ্যে আমার নাম ধ’রে
ডেকে ওঠে খোকা এলি নাকি?
জোছনার ভেতরে বাড়ি ফিরছি ক’দিন
বাড়ি বলতে মেঠোপথ, গাঁয়ের হালট,
শিশিরে ভি’জে থাকা ঘাস, নরম চাষের ভূঁয়ে
শুয়ে থাকা হলুদ চাঁদ, সারি সারি গাছ, বাঁশঝাড়,
ভূতুড়ে ছায়া, বনফুলের গন্ধ।
জোছনার ভেতরে বাড়ি ফিরছি ক’দিন
আঁকাবাঁকা নদীটির ভাঙাচোরা কূল বেয়ে,
শৈশব কৈশোর যৌবনের স্রোতে
কতদূর ভেসে এসেছি আজ এখানে,
কত প্রেম-বিরহের স্মৃতি নিয়ে
আজো হেঁটে যাই এই পথে;

কতখানি বেদনায় এই মাঠ, এই নদী, আকাশের
অগণন তারা কালের প্রবাহে জেগে আছ?
তবু কি শুনতে পাও কোনো পথিকের ভাঙা পাঁজরের
চাপাকান্না?

জোছনার ভেতরে বাড়ি ফিরছি ক’দিন
চরাচর মাঠ ফসলের আদিগন্ত জমি,
ভেসে যায়, ভেসে যায় চাঁদের বন্যায়
হু হু করে ওঠে মন;

এরকম জোছনায় কোনোদিন তোমাকে নিয়ে
পথ হাঁটা হল না আমার।