পহেলা আগস্ট, আমার জন্মদিন, হে আমার চার দশ নয়
তোমাকে ভাসিয়ে দিচ্ছি শৈশবের ভুড়া আর ডিঙি নৌকা ক’রে
ভেসে যাও, ভেসে যাও ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের
বানভাসি মানুষের দ্বারে দ্বারে তুলে নিয়ে এসো
নূহের নৌকার মতো, তুমি হও বানভাসি সব মানুষের
একমাত্র সাশ্রয় আশ্রয় ত্রাণকর্তা।

হে আমার জন্মক্ষণ জন্মদিন, শুভ কি অশুভ তুমি জানি না কিছুই
শুধু জানি শ্বাসরুদ্ধ এই বিরুদ্ধ বাতাসে
ভূমিষ্ঠ করেছ যে শিশুকে, উনপঞ্চাশটি বিসুভিয়াস
বিস্ফোরণ বুকে নিয়ে আজো সে রয়ে গেছে জতুগৃহে
আজো সে শিশু, আজো সে কাঁদে, গোঙায় ঘুমের মধ্যে
আজো সে একাকী অসহায়, ক্ষুধা কাতরতাময়
আজো তার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত উত্তোলিত ওঙ্কারে।

হে আমার জন্মময় জন্মদিন, কবে কখন কে কেন জন্ম নেয়
তৃতীয় বিশ্বের কার ঘরে, কে রাখে খবর তার?
তবু তুমি পহেলা আগস্ট উনিশশো ছাপ্পানোর
সোমবার দিবাগত ভোর রাত্রি; সুবেহ সাদেক
আজানের ধ্বনি, নানা’র কুষ্ঠীতে লেখা
তারচে’ বেশি যে দুজন গেঁথে রেখেছিল মনে
তার একজন গত হয়েছেন বহু অপূর্ণ আকাক্সক্ষা আর স্বপ্নভঙ্গ বেদনায়
আর একজন আজীবন চরম অযতœ অবহেলা বঞ্চনায় অসুখী
আত্মায় গুনছে প্রহর শেষ নিশ্বাসের।

আর যারা মেতে উঠবে উৎসবে কক্ষচ্যুত সেইসব নক্ষত্রেরা
কোথায় তুষারপাতে হিম হয়ে পড়ে আছে ভেজা শালিকের মতো।
সেই সব দুঃখ শোক যন্ত্রণার দাবদাহ বুকে- হে আমার পহেলা আগস্ট
হে আমার বিসুভিয়াস, হে আমার রক্তাক্ত দিবস, হে আমার অকুসুম অভিযাত্রা
হে আমার বিরহবিধুর দিনলিপি, আমি কীভাবে তোমাকে বলি:
শুভ জন্মদিন, সুখি হও, হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ?