এই বুকে গভীর মেঘের ছায়া প’ড়ে আছে
শোকাতুর মায়ের করুণ কান্নাভেজা চোখের মতন,
এই বুকে বৃষ্টি ছিল, রৌদ্র ছিল, ভালোবাসা ছিল
তবু কেউ এসে বুকখানি খোলেনি আমার।

এ-বুকেও ছিল মানুষের মতো স্বাভাবিক স্বপ্ন-সাধ
রাখাল-দুপুর থেকে ফিরে আসা স্নিগ্ধ ছায়া
বকুল-রাত্রির খোঁপা খুলে মৃগনাভি ঘ্রাণের তৃষ্ণা
কোমল বুকের শব্দে কম্পিত নিবিড় নিশ্বাস।

বিনষ্ট বীজের মতো এই বুকে কত স্বপ্ন নষ্ট হলো
কেউ খুঁড়ে দেখল না এ বুকের নিচে ছিল
এক সবুজ সভ্যতা যেন সিন্ধুর হরপ্পা মহেনজোদাড়ো কোনো।

মাটির মতন এই বুক নীরবে সয়েছে দুঃখ
চোখের কোটরে গর্তে আজো তার গাঢ় চিহ্ন
বেদনায় যেনো ঝুলে আছে গুচ্ছ রক্তজবা।

এই বুক বহু স্বপ্ন, ব্যথিত রোদন নিয়ে
অভাবী সংসারে টানাপড়েনের মতো শুধু
একাকী কেঁদেছে নিরালায়, অশ্র“ সমুদ্দুর।

এই বুকে শীতার্দ্র কুয়াশা, তপ্ত চৈত্র, ঝড়, বন্যা, মহামারী
এই বুক কাঁদে বেদনায়, এই বুক ভাঙে ব্যথাতুর শোকে
এই বুকের সকল ব্যথিত বিক্ষোভ একদিন অগ্নি হয়ে
জ্বলে উঠবেই দেখো।

৮.১০.৭৮
খলিসাকুড়া, সিরাজগঞ্জ।