পৃথিবীতে আর কে আছে এমন রহস্যিনী বিচিত্র রূপিণী
ক্ষণে ক্ষণে পলে পলে কে আর এমন বদলায় রূপ! এই হাসো এই কাঁদো
গর্জে ওঠো ভেঙে পড়ো প্রেম অনুরাগ অভিমান বেদনা বিরহে
কী আশ্চর্য পরিবর্তন তোমার লীলাময়ী!

কখনো দুরন্ত কালবৈশাখীর রুদ্রমূর্তি তছনছ করে দাও
শ্যামল প্রান্তর, বনভূমি, নদী ও সাগর, কুঁড়েঘর
শ্রমবস্তি, নাগরিক স্থিতি ভেঙে পড়ে
শ্রাবণের ঘনঘোর বরিষায় অবিশ্রান্ত অঝোর কান্নায়
ডুবে যায় আদিগন্ত চরাচর মাঠ।

কে হবে না আশ্চর্য বলো, আকুল কান্নার দাগ কত দ্রুত মুছে ফেলে
রৌদ্রোজ্জ্বল শারদ শিশিরে হেসে ওঠো ঝলমল শিউলির ঘ্রাণে
কাশশুভ্র মেঘ আর জ্যোৎস্নার পানসি ভাসাও নীলাকাশে!
মৌনমুগ্ধ গরবিনী হলুদাভ মগ্নতায় হৈমন্তিক বিহŸলতায়
সোনালি ফসলে নবান্নের গন্ধে মৌ মৌ করে তোলো বাউরি বাতাস।

বিচিত্র পিয়াসী, যাও বদলে আবার নীরবে একাকী!
যেন বৈরাগ্য সাধনে রুক্ষমূর্তি রিক্তনিঃস্ব সারারাত টুপটাপ ঝ’রে পড়
কুয়াশার বিনম্র চাদরে মুখ ঢাক শীতার্ত সকালে
তবু অতসী গোলাপ গাঁদা চন্দ্রমলি­­কা রজনীগন্ধা ফোটে।

সরষে ফুলের মোহন হাতছানিতে ডেকে আন বাসন্তী রানিরে
আবার নতুন পুষ্পপত্রে মোহময়ী অপরূপা রঙিন যৌবনা
মাতাল দখিনা উন্মাতাল করে দেয় উন্মূল কবিকে।

পৃথিবীর সবচে রহস্যময়ী ঋতুচক্র গৌড়ষড়্ঋতু
লুণ্ঠিত দলিত নিঃস্ব এ বাংলায় বারবার ফিরে এসো।

০৬ মে ২০০৯, ঢাকা