জমিজমা সম্পদ প্রাচুর্য এমনকি নারী নিয়েও
কি কোনো বিরোধ ছিল কমরেড?
তবু কেন মেঘনার ভাঙনের মতো আমরা অস্তিত্বহীন প্রায়
শুচিতার অহংকার ঠেলে দিয়েছে কোথায় আজ
মানুষের মুক্তির সংগ্রাম?

প্রবল বন্যায় ভাঙা নদীরও তো জেগে ওঠে চর
পলি জমেজমে বন্ধ হয় প্রমত্ত খাঁড়ির মুখ
কমরেড, সূর্যের কণাগুলো জমা করে আমরাও কি
শেষবারের মতো জ্বলে উঠতে পারি না যূথবদ্ধ?

‘সমাজতন্ত্রের দিন আজ শেষ’ যারা বলে তারা বলুকÑ
দারিদ্র শেষ হয়ে গেছে, পৃথিবীর কোথাও ক্ষুধা জরা
অনাহার অপুষ্টি নেই, শোষণ পীড়ন বৈষম্য বিভেদ এই শব্দগুলো
কোনো ভাষার অভিধানেই খুঁজে পাওয়া যাবে না আর।

ওরা বলুকÑ সমতা এসে গেছে ঘরে ঘরে
শ্রম আর ঘামের ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বে
মুনাফার বদলে প্রেমের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে
মারণাস্ত্র ছেড়ে গোলাপের চাষ করছে সাম্রাজ্য আগ্রাসীরা
পৃথিবীর একটি শিশুও মারা যাবে না যুদ্ধে
কোনো নারীই আর ধর্ষিতা হবে না বন্দি শিবিরে
কোনো দেশই দখলে যাবে না অন্যদেশের পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষে
কেন খোদ পুঁজির জারজ গর্ভেই জ্বলছে আগুন
দেশে দেশে ফুঁসে উঠছে মানুষ চলছে ঘেরাও দখল?

কমরেড, জেনো এসব প্রশ্নের কোনো জবাবই নেই ওদের কাছে
কেন তাহলে আমরা এখনও দ্বিধা আর সংশয়ের দোলাচলে?

লাল পতাকার দিন শেষ হবে না কখনো
যতদিন পৃথিবীতে তলপেট চিনচিন করবে ক্ষুধার আগুনে
যতদিন বিশাল আকাশ ছাড়া মাথার ওপরে
আর কিছুই থাকবে না অধিকাংশ মানুষের
নগ্নতা ছাড়া আর কোনো পোশাকই থাকবে না ওদের
অন্ধকার ছাড়া আর কোনো আলো জ্বলবে না নিষ্প্রভ চোখে
যতদিন সমঅধিকারে হেসে উঠবে না প্রবঞ্চিতের ঠোঁট
ততদিন সমাজতন্ত্রের প্রয়োজন ফুরাবে না কোথাও।

তাহলে বিলম্ব আর কেন
অনেক তো হলো এসো বন্ধু এসো সাথী
পুরানো তর্ক ফেলে সব বিভেদ অনৈক্য ভুলে
সমুদ্রের মোহনার মতো আমরা একত্র হই
পচা আঙুরের মতো বিচ্যুতদের পিছু ফেলে
কাঁচা পেয়ারার মতো নতুনদের সাথে নিয়ে
আমরা এগিয়ে যাই।

নাচোল থেকে উঠে আসুক হাতুড়ি কাস্তে হাতে অজস্র কিষানী
পাবনার জেলখানা ভেঙে আসুক প্রমত্ত বিপ্লবী
কাগমারি থেকে বাঁশের লাঠি হাতে দুর্বিনীত শ্রমিক
সিরাজগঞ্জ থেকে দুর্দান্ত সশস্ত্র গণবাহিনী
ময়মনসিংহ থেকে লাল পট্টি বাঁধা ক্ষেতমজুর
আত্রাই থেকে অগণিত কৃষক
পেয়ারা বাগান থেকে সাহসী গেরিলা
যূথবদ্ধ সমাবেশের প্রগাঢ় আলিঙ্গনে
শুরু হোক নতুন যুদ্ধের সূচনা।

শ্মশানে শায়িত সা¤্রাজ্যবাদের চিতায় জ্বেলে দেই