এ-রকম ভোরস্বপ্ন তোমাকেও উষ্ণ উন্মাদিনী করে তোলে?
টানটান নদীর জলের মতো উচ্ছ্রিত জোয়ারে
ফুলে ফুলে দুলে দুলে ওঠে শরীরের প্রতিটি লোহিত কণা?
ঘূর্ণির মতন পা থেকে মাথা পর্যন্ত পাক দিয়ে ওঠে
ভূমিকম্পের মতন কেঁপে কেঁপে ওঠে নাভীমূল
বন-কাঁপানো ভয়ংকর গর্জনে সহসা গভীর ঘুম
থেকে জেগে ওঠে রক্ত পিপাসু বাঘ!

বিশ্বাস করো, ঘুমাবার আগে বা তন্দ্রাচ্ছন্নতার মধ্যেও একবার
ভাবিনি তোমার মুখ; এমন কি সারারাত অন্যান্য টুকরো
টুকরো স্বপ্নে বহুবার ভেঙে গেছে ঘুম অথচ অনিকেত ভোরে
কবিতার অসহ্য সুন্দর দৃশ্যকাব্যের মতন অপূর্ব নগ্ন উদ্ভাসে
আমার লোমশ বুকে মুখ ঘসে তুমি বললে,
‘কতদিন আকণ্ঠ তৃষ্ণায় চৌত্রের মাটির মতন চৌচির হয়ে আছি
আজ আমি চাই আষাঢ়ের বর্ষণের মতন সম্পূর্ণ তোমাকে’
অঝোর বৃষ্টির মতন চুম্বনে ভরে দিলে সমস্ত শরীর
গভীর আলিঙ্গনে তুলে নিলে যেন এভারেস্ট চূড়ায়।

মৌমাছি উড়ে যাওয়া মধুচাকে মুখ ডুবিয়ে দিতেই
সুমসৃণ হাঁটু ভাজ করে খুলে দিলে পৃথিবীর স্বর্গদ্বার
আজন্ম আতপ্ত আমূল তৃষ্ণার্ত আমার জিহŸা তোমার
কোমল-কস্তুরি স্পর্শের অদ্ভুত শিহরণে তুমি কঁকিয়ে ওঠার
সঙ্গে সঙ্গে কী নিষ্ঠুর জল­াদের মতন কে যেন ভেঙে দিল আমার
এ-যাবতকালের শ্রেষ্ঠতম মধুস্বপ্ন!

এ-রকম স্বপ্নভঙ্গের চেয়ে মৃত্যুই কি কাম্য নয়
কী রকম কষ্ট-যন্ত্রণার এই জাগরণ তুমি কি বুঝবে কোনোদিন?
লোকে বলে, ভোরস্বপ্ন বৃথা যায় না কখনো, ভোরস্বপ্ন নিরানব্বইভাগ ফলে

আমার প্রার্থনা আজ থেকে-যেন মাত্র একভাগ অসম্ভাবনা পূর্ণ করে
হে আমার স্বপ্নেশ্বরী, তুমি আমার ভোরস্বপ্ন বাস্তবায়িত করো।

২৬ আগস্ট ২০০৯, ঢাকা