কে কাঁদে ওখানে ওই পথপাশে শিশু এক
অন্তর্ভেদী তার কান্নার ধ্বনি বিপন্ন করে দেয়
ভোরের সকল আয়োজন সাজানো চায়ের কাপ
মচমচে টোস্ট তাজা খবরের পাতা
রক্তবর্ণ নরঘাতকের হিংস্র রগকাটা অভিযানে
পদ্মার খাঁ খাঁ বালিয়াড়ি ডুবে যাবে গঙ্গার
পানির ন্যায্য হিস্যা ছাড়াই?

কে কাঁদে ওখানে সরকারি তহশিল অফিস চত্বরে
কোন্ অসহায় পরিত্যক্ত শিশু?
তার অন্তর্ভেদী কান্নার আওয়াজ কিছুতেই জীবনানন্দের
বিস্ময় মস্তিষ্কে দেয় না ঢুকতে।
প্রচণ্ড শক্তিতে দেয়ালে ঝুলানো রবীন্দ্রনাথের দাড়ি
সজোরে ছিঁড়ছে টেনে ব্যথায় কুঁকড়ে উঠেছেন কবিগুরু
বুকশেলফের প্রতিটি বইয়ের পাতা ঝ’রে ঝ’রে পড়ছে
বহুদিনের কীটদ্রষ্ট কাগজের টুকরোর মতো।
দেয়ালের সদ্য ডিসটেম্পারে যেন পিচকিরি দিয়ে
ছিটিয়ে দিচ্ছে নোংরা জলকাদা
তন্ময় কাব্যের ঝাড়বাতি মেঝেতে আছড়ে পড়ছে
চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে।

হায় আমার বাংলাদেশ
চিরকাল শিশুর কান্নার মর্মভেদী আর্তনাদ!

ফেব্র“য়ারি ‘৯৩ ঢাকা