মিতাছেনের ট্রেনের ভিতর
পাশে বসা নীলবসনা নিহঙ্গিনী
মুখের ভাষার অমিল হলেও
হৃদয়ভাষা সব মানুষের একই তো হয়;
মিষ্টি মেয়ে লাজুক হেসে বলেছিলে
‘হাজিমে মাসতে দো মো ইউরেশিকু আনাগাইসি মাস।’

সিল্ক-মসৃণ কোমল হাতে
সাগর-সেচা ঝিনুক যেন
মনোহর এক প্যাকেট খুলে এগিয়ে দিলে
মুঠোভর্তি স্বাদু চকোলেট মৃদু হেসে।

‘সুন্দরী হে, তুমি খুবই সুন্দরী’
বলতেই যেন লাউয়ের ডগা
ডগোমগো বারবার মাথা নোয়ালে
‘সিমাসেন আরিগাতো গোজাইসমাস’
খুশিতে যেন উপ্চে উঠল
তোমার চোখে নীলসমুদ্র।

এমনিভাবে ঘুচে গেল ভাষার বাধা
তমোমি, তুমি সত্যি সুন্দর
আরো সুন্দর সহজ মিশুক মনটি তোমার
এত সহজে এই প্রবাসে এমন করে
আর কেউই নেয়নি ডেকে।

মিতোছেনের ট্রেনের ভিতর
পাশাপাশি অনন্তকাল বসে আছি
দুরন্ত ট্রেন পাতালপুরির যাচ্ছে ছুটে নিরুদ্দেশ।

কিন্তু একী ওতামাসি স্টেশনে এসেই
‘সাইয়োনারা’ বলেই হঠাৎ নেমে গেলে!

এমন তোমার তাড়া কী ছিল
মিতাছেনের ট্রেনের ভিতর
হঠাৎ পাওয়া নীলবসনা নিহঙ্গিনী?
আরেকটু পথ বসলে পাশে
কীইবা এমন ক্ষতি হত
বরং তুমি সারাজীবন রক্তঝরা
ক্ষত না হয়ে কাব্যকুসম
ফুটে থাকতে এ হৃদয়ে।

তোমার কাছে হয়তো সেটা
চলার পথে ক্ষণিক দেখা
আমার জন্যে দীর্ঘশ্বাসের গোটা জীবন!

১.৬.৯৩ জাপান