যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়ে
সুনসান মধ্যরাত্রি।
দেয়াল-বন্দি তোমার ছবি থেকে
চুপি চুপি নেমে আসো তুমি আমার টেবিলে।
জাপানি পুতুলের মতন পিটপিট করে চাও
আমার খাতার পাতায়, পাশে বসো।
অনেকক্ষণ ছোট্ট শিশুর মতন ঝুঁকে থাকো
প্রতিটি শব্দের প্রতি। সহসা এক ঝটকায়
কেড়ে নিয়ে নিউজপ্রিন্টের বাঁধাই ছুড়ে
ফেলে দাও জানালা দিয়ে বাইরে। আমি
হা হা করে উঠি বুক চাপড়ে। তুমি খিলখিল
হেসে ওঠো। টান মেরে তুলে নাও নড়বড়ে কাঠের
চেয়ার থেকে ধূলিময় মেঝেতে। আমাকে সটান
দাঁড় করিয়ে, মধুর হাসি উদ্ভাসিত তুমি ধীরে ধীরে
তৈরি করো নিপুণ নাচের মুদ্রা। ঝুম্-ঝুমা-ঝুম্
বাজতে থাকে তোমার পায়ের নূপুর।
সহসা আমার চোখে খুলে যায়
ইতিহাসের এক আদিম ঝরোকায়
চোখ ঝলসানো এক সম্রাটের জলসায়
যেন নেচে যায় এক ঐন্দ্রজালিক নর্তকী।

ক্রমাগত তার নাচের মুদ্রায় কেঁপে কেঁপে ওঠে
ওই প্রাসাদের বহু রতœখচিত ভিত্
প্রচণ্ড ঝড়ের ঝাপটায় নিভে যায় ঝাড়বাতি,
হঠাৎ প্রাগৈতিহাসিক এক অন্ধকারে শোনা যায়
সকাতর আর্তনাদ, বিশাল চিৎকার।

আমার কবিতার খাতা ভরে ওঠে
সেই ভয়াবহ সুন্দর নারকীয় সুদৃশ্যের বর্ণনায়।
দেয়াল-বন্দি তোমার ছবি জীবন্ত হয়ে ওঠে,
সম্পূর্ণ আদিম নগ্নসৌন্দর্যে আলিঙ্গন করো তুমি আমাকে
আর আমি যেন হয়ে যাই পৃথিবীর অনন্য শ্রেষ্ঠ কবি।